স্থাপিত: 21 মার্চ, 1975 ইং
বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা) এর বাঘাবাড়ীঘাট দুগ্ধ কারখানাটি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে অবস্থিত। কারখানাটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন 21 মার্চ, 1975 ইং তারিখে তৎকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনাব এম. মনসুর আলী। প্রায় 19.88 একর জায়গার উপরে বাঘাবাড়ীঘাট দুগ্ধ কারখানাটি স্থাপিত হয়েছে।
মাননিয়ন্ত্রণ শাখা, বিডিপি এর কার্যক্রম
1। সমবায়ীদের/খামারীদের নিকট থেকে সংগৃহিত দুধ প্রথম মিল্ক ভিটার বাঘাবাড়ীঘাট দুগ্ধ কারখানায় দুগ্ধ গ্রহণ শাখায় প্লাটফর্মে নিয়ে আসে। আগত সকল দুধ প্লাটফর্মে সর্বপ্রথম প্লাটফর্ম টেষ্ট করে দুধ ব্যালান্স ভ্যাটে টেলে দেওয়া হয়। ব্যালান্স ভ্যাটে দুধ সঠিক ভাবে মিশ্রণের পর একটি নমুনা দুধ নিয়ে ফ্যাট% দুগ্ধ গ্রহণ ল্যাবে নির্ণয় করা হয়। উক্ত নির্ণয়কৃত ফ্যাট হিসেবে সমবায়ীদের দুধের মূল্য পরিশোধ করা হয়।
2। সংগৃহিত সকল দুধ বিডিপি কারখানায় সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে মানসম্মত দুধ ঢাকা ডেইরীতে প্রেরণের পর বিডিপিতে অবস্থিত দুধ থেকে যে সকল দুধ পণ্য উৎপাদন করা হয় সে সকল পণ্যের নিম্নোক্তভাবে মাননিয়ন্ত্রণ শাখায় দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের (Organoleptic, Physical & Chemical and Bacteriogical test)
পরীক্ষার পদ্ধতি :
উৎপাদন শাখা, বিডিপি এর কার্যক্রম
উৎপাদন শাখার ইউনিট সমূহ:-
ক) দুগ্ধ গ্রহণ শাখা
খ) প্রসেসিং শাখা
গ) মাখন উৎপাদন শাখা
ঘ) ঘি উৎপাদন শাখা
ঙ) গুঁড়োদুধ উৎপাদন শাখা
চ) মাখন, ঘি, গুড়োদুধ ,লাবাং প্যাকিং শাখা।
ক) দুগ্ধ গ্রহণ শাখা :
প্রতিদিন সকাল বিকাল সমিতি কর্তৃক সরবরাহকৃত মানসম্মত কাঁচা দুধ এই শাখায় গ্রহণ করা হয়। কাঁচা দুধ রিসিপশন ডকে এ আসলে মাননিয়ন্ত্রণ শাখার মাধ্যমে গুণগতমান পরীক্ষা করে দুধ গ্রহণ করা হয়। মাননিয়ন্ত্রণ শাখা প্রতিটি সমিতির সমুনা সংগ্রহ করে ফ্যাট টেস্ট করে পরবতীতে ননীর উপর ভিত্তি করে মূল্য পরিশোধ করা হয়।
খ) প্রসেসিং শাখা:
প্রসেসিং শাখায় দুগ্ধ গ্রহণ শাখার দুধ ও বিভিন্ন চিলিং সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত দুধ পাস্তরাইজাড করা হয়। পাস্তুরাইজেশন এর মাধ্যমে দুধের ক্ষতিকর জীবানু ধংস করা ও অন্যান্য জীবানুর লোড কমানো হয়। এতে দুধের সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও দুধ নিরাপদ হয়।প্রসেসিং শাখায় ক্রীম সেপারেশন এর মাধ্যমে ক্রীম সেপারেশন করে বাটার উৎপাদন ও ঘি উৎপাদন শাখায় সরবরাহ করা হয়। এ শাখা থেকে ডিডিপি এর চাহিদাকৃত তরল দুধ ট্যাংকারে লোড দিয়ে ডিডিপিতে পাঠানো হয়। গুঁড়োদুধ উৎপাদন প্লান্টে এই শাখা থেকে দুধ সরবরাহ করা হয়। এই শাখার দুধের মজুদ রাখা যায় 2,00,000 লিটার।
গ) বাটার উৎপাদন শাখা:
সরবরাহকৃত ক্রীম পাস্তুরিত করে বাটার উৎপাদন করা হয়। তিন ধরনের বাটার তৈরী করা হয়। যথা:- লবন যুক্ত, লবনবিহীন ও ঘিয়ের বাটার। এই শাখায় 10 কেজি করে বাটার প্যাকিং করে বিডিপি এর ফ্রিজিং রুমে সংরক্ষণ করা হয়। এই শাখার উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় 3 মে.টন প্রতিদিন।
ঘ) ঘি উৎপাদন শাখা:
এই শাখায় ক্রীম বাটার পদ্ধতিতে ঘি উৎপাদন করা হয়। প্রতিদিন প্রায় 1 মে.টন ঘি উৎপাদন করা হয়।
ঙ) গুঁড়োদুধ উৎপাদন শাখা:
বিডিপিতে বর্তমানে র্গুঁড়োদুধ উৎপাদনের জন্য 02 টি প্লান্ট চালু আছে।
ক) ইনস্ট্যান্ট পাউডার প্লান্ট আইপিপিঃ এই প্লান্টে ননীবিহীন ও ননীযুক্ত গুঁড়োদুধ উৎপাদন করা হয়। এই প্লান্টে প্রতিদিন গড়ে 80/85 হাজার লিটার দুধের গুড়োদুধ উৎপাদিত হয়।
খ) স্প্রে পাউডার প্লান্টঃ এই প্লান্টে শুধুমাত্র ননীবিহীন গুঁড়োদুধ উৎপাদন করা হয়। এটি দীঘদিনের পুরাতন প্লান্ট। এখানে নন ইনস্ট্যান্ট গুড়োদুধ উৎপাদন হয়। প্রতিদিন গড়ে 15,000 লিটার স্কিমমিল্ক গুঁড়োদুধ উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়।
এখানে উল্লেখ্য যে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীঘাটে গুঁড়োদুধ দুগ্ধ কারখানা স্থাপন শীষক প্রকল্পের নতুন অত্যাধুনিক পাউডার প্লান্টটি চালু হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এ প্লান্টে প্রতিদিন 2 লক্ষ লিটার তরল দুধ থেকে গুঁড়োদুধ উৎপাদন করা যাবে।
চ) বাটার, ঘি, গুঁড়োদুধ ও লাবাং প্যাকিং শাখায়: এই শাখায় বিপণন বিভাগের চাহিদা মোতাবেক অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে প্যাকিং কায©ক্রম চালানো হয়।
প্রতিটি পণ্য প্যাকিং করে বিডিপির ভান্ডারে প্রেরণ করা হয়।
ইনস্ট্যান্ট পাউডার প্লান্ট (আইপিপি) :
বাঘাবাড়ীঘাট দুগ্ধ কারখানায় 2004 খ্রিঃ সালে স্থাপিত ইনস্ট্যান্ট পাউডার প্লান্টে দৈনিক 1,00,000 লিটার তরল দুধ হতে গুঁড়োদুধ উৎপাদিত হয়।
সুপার ইনস্ট্যান্ট পাউডার প্লান্ট :
‘সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীঘাটে গুঁড়ো দুগ্ধ কারখানা স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও মিল্ক ভিটার যৌথ উদ্যোগে নির্মিত দৈনিক 2,00,000 লিটার তরল দুধ হতে গুঁড়োদুধ উৎপাদনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সুপার ইনস্ট্যান্ট পাউডার প্লান্টটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
অর্থ ও হিসাব শাখা, বিডিপি এর কার্যক্রম:
বিডিপির অর্থ ও হিসাব শাখা হতে 390 টি প্রাথমিক সমিতি ও দুগ্ধ খামারী/সরবরাহকারীর দুগ্ধের বিল প্রতি সপ্তাহে 5 টি ব্যাংকের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে পরিশোধ করা হয়ে থাকে। দুগ্ধ বিল ও সম্পূরক মূল্য সহ মাসিক গড়ে প্রায় ৬ (ছয়) কোটি ও বছরে 70 থেকে 72 কোটি টাকার দুগ্ধের বিল সমবায়ীদের পরিশোধ করা হয়। ইহা ছাড়া প্রাথমিক ও কেন্দ্রীয় সমিতিতে প্রদত্ত গো-খাদ্যে ও গাভী ঋণ আদায়ের কিস্তি নিয়মিত দুগ্ধ বিল হতে কর্তণপূর্বক সংশ্লিষ্ট ফান্ডে স্থানান্তর করা হয়। প্রাথমিক সমিতি পরিচালনা বাবদ প্রতি লিটার দুগ্ধের বিল হতে 1 (এক) টাকা কর্তণ করে মাস শেষে উক্ত টাকা সংশ্লিষ্ট সমিতির ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়ে থাকে।